বেনাপোল কাস্টমস্ কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যের ছবি এখন প্রকাশ্য !
বিশেষ প্রতিনিধি: যশোরের বেনাপোল কাস্টমস কর্মকর্তাদের ঘুষ গ্রহন এখন অনেকটাই ওপেন সিক্রেট হয়ে দাড়িয়েছে। বিভিন্ন কৌশলে কাস্টমস কর্মকর্তারা কোটি কোটি টাকা শুল্ক ফাঁকি দিতে ব্যবসায়ীদের সহযোগীতা করে আসছে। এতে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব আর কালো টাকার পাহাড় গড়ছে কাস্টমস কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি ঘুষ বাণিজ্য বেড়ে যাওয়ায় গেল কয়েক বছর ধরে আমদানি পণ্য থেকে রাজস্ব বোর্ডের লক্ষ্যমাত্রা কোন ভাবে পূরণ হচ্ছেনা। ঘুষ গ্রহনে দিন দিন কাস্টমস কর্মকর্তারা বেপরোয়া হয়ে উঠলেও যেন প্রতিরোধে দায় নেই কারো। গত দুই দিন ধরে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের এক রাজস্ব কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্যের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে বিভিন্ন মহল থেকে ঘুষ গ্রহনকারী কাস্টমস কর্মকর্তার প্রত্যাহারসহ কাস্টমস আইনে শাস্তির দাবী জানিয়েছেন।
জানা যায়, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের সহকারী রেভিনিউ অফিসার (শুল্কায়ন গ্রুপ-৪) রাসেল কবীর সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিতে আমদানি কারকদের সহযোগীতা করে পণ্য চালানে সাক্ষর করে প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহন করছেন। তার ঘুষ গ্রহনের ছবি ভুক্তভোগী কোন এক ব্যবসায়ী ভিডিও ধারন করে ছেড়ে দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
ভুক্তভোগি ব্যবসায়ী জানান, মঙ্গলবার (১লা ডিসেম্বর) বেনাপোল কাস্টমস হাউসে খুকা এভ এর ব্যানারে কর্মকর্তাদের কলম বিরতি পালন শেষে কাজে ফিরেই সি এন্ড এফ কর্মচারীদের কাছ হতে ফাইল প্রতি প্রকাশ্যে ঘুস গ্রহন করেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঐ দিন ওই কর্মকর্তার নিকট ফাইল সই করাতে যাওয়া এক সি এন্ড এফ এজেন্ট কর্মচারী জানান, ঘুসের টাকা কম দেওয়ায় ১টি ফাইল ও ঘুসের টাকা ছুড়ে ফেলে দেন এআরও রাসেল কবির। বেনাপোল কাস্টমস কর্মকর্তাদের ইন্ধনে বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়েই শুল্ক ফাঁকির পন্য চালান অনায়াসে বের হয় বলে আরো জানান তিনি। তাৎক্ষনিক ঐ কর্মকর্তার কাছে ঘুস নেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি দম্ভ করে বলেন যত পারেন নিউজ ছাপেন, আমার কিছু হবে না। রাসেল কবিরের সরাসরি ঘুষ গ্রহনের দৃশ্যটি গণমাধ্যম কর্মীরা ক্যামেরা বন্দী করলে পরে ঐ কর্মকর্তা বিষয়টি জানতে পারলে তার পক্ষ্যে ঘটনাটি নিয়ে সাংবাদিকদের বাড়া বাড়ি না করার জন্য একাধিক স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যাক্তি নিষেধ করেন বলে নিশ্চিত করেন।
এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনারের অফিসে ফোনে কল করেও সংযোগ না মেলায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, বেনাপোল কাস্টমস হাউসে শুল্কায়ন পরীক্ষণসহ বিবিধ কাজে ফাইল প্রতি ৩ হতে ৫ হাজার টাকা কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার জনশ্রুতি রয়েছে। টাকা না দিলে দিনের পর দিন ফাইল পড়ে থাকে, অনেক ক্ষেত্রে লাঞ্চিত হতে হয় আমদানি কারকদের পক্ষে কর্তব্যরত সি এন্ড এফ এজেন্ট নিয়োজিত প্রতিনিধিদের।
জানা গেছে, কর্মকর্তাদের অসাধু ব্যাবসায়ীদের ক্ষেত্রে ফাইল প্রতি ঘুসের পরিমান লাখ বা কোটির অঙ্কে। সব কিছু উর্দ্ধতনদের জানা থাকলেও পরিবর্তন হয়নি স্টেশনটির অনিয়ম-দুর্নীতি। লোক দেখাতে শুল্ক ফাঁকির অপরাধ কাজে জড়িত সি এন্ড এফ এজেন্ট ব্যাবসায়ীদের লাইসেন্স সাময়িক স্থগিত বা বাতিল করলেও তাদের অপরাধ কাজের ইন্ধন ও মদদদাতা অসাধু কর্মকর্তারা বরাবরই ধোয়া ছোয়ার বাইরে।