২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

৭ উইকেটে হারলো টাইগাররা

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
মার্চ ২০, ২০২২
15
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
৭ উইকেটে হারলো টাইগাররা
ছীব- সংগৃহীত | ছবি : ৭ উইকেটে হারলো টাইগাররা

কীড়া ডেস্কঃ জোহানসবার্গের ওয়ান্ডারার্স ক্রিকেট গ্রাউন্ড রীতিমত ব্যাটিং স্বর্গ। এই ভেন্যুতে একদিনের সংস্করণে চারশ ছাড়ানো সংগ্রহ আছে ৩টি। তিনশ ছাড়ানো ইনিংস আছে সব মিলিয়ে ১৯টি। সেখানেই কি-না টেনেটুনে ১৯৪ রানের সংগ্রহ বাংলাদেশ দলের। ৩ ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে জিতে আজ রোববার দ্বিতীয় ম্যাচে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছিল সফরকারীরা। তবে আত্মবিশ্বাসী দলটাকে টেনে মাটিতে নামাল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের কাছে ৭ উইকেটের বিশাল হারে সিরিজ জয়ের অপেক্ষা বাড়ল টাইগারদের।

পিংক ডে ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ দলের ইনিংসের শুরুটা সুখকর হয়নি। ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে পথ হারায় সফরকারীরা। পরে আফিফ হোসেনের অর্ধশতক হাঁকানো ১০৭ বলে ৭২ রানের ইনিংসের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজের ৩৮ রানের কল্যাণে ১৯৪ রানের পুঁজি পায় অধিনায়ক তামিম ইকবালের দল। ১৯৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দাপুটে শুরু পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ওপেনার কুইন্টন ডি ককের ঝড়ো অর্ধশতকে সঙ্গে কাইল ভেরেইনার ফিফটিতে ৭ উইকেট এবং ৭৬ বল হাতে রাখে বিশাল জয় তুলে নিয়েছে প্রোটিয়ারা।

এই জয়ের কল্যাণে আইসিসি সুপার লিগের গুরুত্বপূর্ণ ১০ পয়ন্ট অর্জন করলো দক্ষিণ আফ্রিকা। সঙ্গে বাংলাদেশকে অপেক্ষায় রেখে সিরিজে ১-১ এ সমতা ফেরাল টেম্বা বাভুমার দল। ফলে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি অলিখিত ফাইনালে রূপ নিলো। যে ম্যাচটি মাঠে গড়াবে আগামী ২৩ মার্চ।

অসুস্থতার কারণে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ছিলেন না ডি কক। ফিরেই ব্যাট হাতে ধ্বংসলীলা চালালেন তিনি। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটি যেন বেছে নিলেন নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়ার মঞ্চ হিসেবে। পেস কিংবা স্পিন- কোনো আক্রমণেই দমানো যাচ্ছিল না এই ওপেনারকে। ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে মাত্র ২৬ বলে ক‍্যারিয়ারের ২৮তম ফিফটি পূরণ করেন তিনি। আরেক ওপেনার মালানকে এক পাশে দর্শক বানিয়ে রেখে ছোটেন সেঞ্চুরির পথে।

অবশেষে ইনিংসের ১৩তম ওভারে ব্রেক থ্রু এনেন দেন স্পিনার মিরাজ। দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন ইয়ানেমান মালানকে। অফে শাফল করে প‍্যাডেল সুইপ করতে চেয়েছিলেন ডানহাতি ওপেনার। বলের লাইনে যেতে পারেননি। হয়ে যান বোল্ড। ভাঙে ৭৫ বল স্থায়ী ৮৬ রানের জুটি। খানিক পর ডি কককে ফেরান সাকিব। বাঁহাতি স্পিনারকে ছক্কায় ওড়াতে চেয়েছিলেন ডি কক। তবে ডিপ মিড উইকেটে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন আফিফ। ৪১ বলে ২টি ছক্কা ও ৯ চারের সাহায্যে ৬২ রান করেন ডি কক।

দ্রুত দুই উইকেট হারালেও দলকে চাপে পড়তে দেননি বাভুমা আর ভেরেইনা। দলের হাল ধরে জয়ের বন্দরে নিয়ে যেতে থাকেন দুই জন। তবে শেষ দিকে এসে আউট হন অধিনায়ক বাভুমা। স্পিনার আফিফকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানা পার করতে পারেননি। চমৎকার ক‍্যাচ নেন শরিফুল ইসলাম। ভাঙে ১০১ বল স্থায়ী ৮২ রানের জুটি। ৫২ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৩৭ রান করেন বাভুমা। এরপর ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নেন ভেরেইনা। দলকে পাইয়ে দেন ৭ উইকেটের বড় জয়।

ভেরেইনা ৭৭ বলে ৪টি ছয় আর ২ চারে ৫৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ডুসেনের ব্যাট থেকে আসে ৩ রান। বাংলাদেশের হয়ে তিন স্পিনার সাকিব, মিরাজ আর আফিফ ৩টি করে উইকেট নেন।

এর আগে লিটনকে নিয়ে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে নামা তামিম আজও চেয়েছিলেন ধীরে খেলার নীতিতে শুরুর কয়েকটা ওভার কাটিয়ে দিতে। কিন্তু ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই ফিরতে হলো তাকে। বাড়তি বাউন্সের জন‍্য লুঙ্গি এনগিডির ডেলিভারি ঠিক মতো খেলতে পারলেন না তামিম। ব‍্যাটের উপরিভাগে লেগে উঠে গেল সহজ ক‍্যাচ। ৪ বলে ১ রান করে আউট হন তামিম।

আরও পড়ুন>>>ধর্ষণের পর হত্যা করে আবার ধর্ষণের চেষ্টা করে খুনি

৭৭ রান করে আগের ম্যাচের নায়ক বনে যাওয়া সাকিব আল হাসান এ ম্যাচে রানের খাতা খুলতে পারলেন না। রাবাদার বাড়তি বাউন্সের বলটি লেগ সাইডে ঘোরানোর চেষ্টা করেন সাকিব। ঠিক মতো খেলতে পারেননি, ব‍্যাটের কানায় লেগে ক‍্যাচ যায় কাভারে। একটু সরে গিয়ে সেটি মুঠোয় জমান কাইল ভেরেইনা। ৬ বলে শূন্য হাতে সাজঘরে ফেরেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। লিটনকে নিয়ে আশার বেলুন ফোলানোর আগেই তিনিও ধরলেন সাজঘরের পথ। রাবাদার বল অনেকটা লাফিয়ে লিটনের গ্লাভস ছুঁয়ে জমা পড়ল কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে। ১৫ রানে ফিরলেন তিনি।

২৩ রানে ৩ উইকেট হারানো দলটিকে টেনে তোলার দায়িত্ব পড়ে মুশফিকুর রহিম আর ইয়াসির আলি রাব্বির কাঁধে। তবে এই ভার নিজেদের কাঁধে রাখতে পারলেন না তারা। রানের খাতা খোলার আগে একবার জীবন পাওয়া রাব্বি রাবাদার লাফিয়ে ওঠা বল অনায়াসে ছেড়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তাড়া করতে তিনি। ব‍্যাটের কানায় লেগে সহজ ক‍্যাচ যায় ব‍্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে। ১৪ বলে ২ রান করে আউট হন তিনি।

সতীর্থদের দেখানো পথে হাঁটলেন মুশফিকুর রহিমও। অসংখ‍্য ম‍্যাচে ইনিংস মেরামত করে বাংলাদেশকে বাঁচানো মুশফিকুর রহিম ব‍্যর্থ এবার। বাঁহাতি পেসার পার্নেলের বল লেগ স্টাম্পে পড়ে বেরিয়ে যাওয়া সময় বাড়তি সুইং আশা করেছিলেন মুশফিক। কিন্তু তার প্রত‍্যাশার চেয়ে সুইং ছিল বেশ কম। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ না নিয়ে ৩১ বলে ১১ করে ফেরেন মুশফিক।

মুশফিকের আউটের পর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন আফিফ হোসেন আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন ৬০ রানের জুটি। তবে সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ইনিংসের ২৮তম ওভারের প্রথম বলে ডিফেন্স করতে গিয়ে লেগ স্লিপে মালানের হাতে ক্যাচ দেন এই ব্যাটসমান। তার ব্যাট থেকে আসে ৪৪ বলে ২৫ রান।

মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর দলীয় একশ রানের কোটা পূর্ণ করে বাংলাদেশ। মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে জুটি গড়ে অর্ধশতক তুলে নেন আফিফ। ৭৯ বলে ৭টি দারুণ চারে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটির দেখা পান তিনি। অন্যদিকে মিরাজও অন্যপ্রান্ত থেকে রান করছিলেন। আফিফ যখন শতকের দিকে এগোচ্ছিলেন তখনই রাবাদার চতুর্থ শিকার হন তিনি। ১০৭ বলে ৭২ রান করে আউট হন আফিফ।

সেই ওভারেই রাবাদার পঞ্চম শিকার হন মিরাজ। দারুণ খেলতে থাকা মিরাজ থামেন ৪৯ বলে ৩৮ রান করে। তাদের বিদায়ে ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ১৯৪ রান। রাবাদা ৫টি এবং ১টি করে উইকেট নেন এনগিডি, শামসি ও ডুসেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram